Change font size -A A +A ++A
ব্যুরো রিপোর্ট/
পাল সম্রাট ধর্মপালের এ জগতে জনকল্যাণমূলক কিছু বিশিষ্ঠ নিদর্শনের মধ্যে অন্ততম হলো বিক্রমশিলা মহাবিহার| পাল যুগের এই অভূতপূর্ণ নিদর্শনের কাছে বাঙালি জাতির সত্তা এবং ভাষা চিরকালই ঋণী| পালযুগের শেষার্ধ্যের কিছু আগে এই মহাবিহার থেকে আর এক প্রতিভার উদয় হয়ে ছিল, যিনি ছিলেন এক আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্য ব্যক্তিত্ব এবং আজও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে ঈশ্বর রূপে পূজিত|
সেই মহামানব দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ আজও আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায় আমাদের সামনে বিরাজমান| আজ পৃথিবীর এক বৃহত অংশে যে বৌদ্ধ ধর্ম টিকে রোয়েছে তার পেছনে অতীশের সম্পূর্ণ অবদান রোয়েছে| কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে, আমাদের কাছে অতীশের কোনো ইতিহাস প্রমাণিত সাক্ষ নেই, আর যেটা আছে সেটা বিতর্কিত| এই প্রবন্ধের মাধ্যমে News5PM সেই অজানা অতীতের গহ্বর থেকে কিছু ইতিহাস তুলে এনে সুধী পাঠকবৃন্দদের সামনে রাখতে চেষ্টা করচ্ছে|
ইতিহাস সাপেক্ষিক অতীত :
মূল প্রবন্ধে যাবার আগে ইতিহাস সাপেক্ষিক কিছু তথ্য তুলে ধরার প্রয়োজন আছে. অষ্টম শতাব্দীতে সম্রাট ধর্মপাল দ্বারা নির্মিত বিক্রমশিলা মহাবিহার আজ থেকে প্রায় 1200 এর বেশী বছর আগের তুর্কি হানাদারদের প্রতিঘাতে ধুলিস্যাত হয়ে গিয়েছিল (অনেকে বোলে থাকেন যে বকতিয়ার খিলজীর আক্রমনে বিক্রমশিলা সম্পূর্ণরূপে ধংসপ্রাপ্ত হয়ে ছিল, কিন্ত এই রূপ মত ইতিহাস সাপেক্ষিক নয়)| বিক্রমশিলা এইভাবে লোকচক্ষুর অন্তরালে হারিয়ে গিয়েছিল কয়েকশো বছরে জন্যে| যদিও প্রাচীন বৌদ্ধ গ্রন্থে এবং ইতিহাসকারেদের কলমে এই মহাবিহার জীবিত রয়ে গিয়েছিল|
মধ্যযুগের ইতিহাসকাদের কাছে এই মহাবিহারের সঠিক অবস্থানের স্থল এক প্রকারে রহস্যে পরিনত হয়ে উঠেছিল, বিভিন্ন মতবাদের কারণে হারিয়ে যাওয়া এই মহাবিহারের সঠিক সন্ধান কেউ করতে পারেনি| ব্রিটিশ অর্কলোগিস্ট, কান্নিনঘাম সহিত কিছু প্রমুখ ব্যক্তি, ডা. এস সি বিদ্যাভূষণ, রাহুল সংসক্রিত্যায়ান ইত্যাদি বিক্রামশিলার সঠিক অবস্থান খুঁজে উঠেতে পারেন নাই| তবে 1810-1811 সাল নাগাত সুপ্রিসিদ্ধ বিদেশী পর্যটক, ফ্রান্সিস বুকানান বিহারের ভাগলপুর জেলা পরিদর্শনে, জেলা মুখ্যালয় থেকে প্রায় 44 কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিগে গঙ্গা নদীর ধারে অন্তিচক গ্রামে (কাহালগাঁও অনুমণ্ডল)এক বৃহত মাটির ঢিবির কথা নিজের ভ্রমন বৃতান্ত তে লিখেছেন| সম্ববত, বুকানন প্রথম ব্যক্তি ছিলেন যিনি ঐ মাটির ঢিবির নিচে বিক্রমশিলার অবশেষের থাকার অনুমান করে ছিলেন| অবশ্য পরে সি এফ এ ডবলু ওল্ডহম যিনি বুকাননের ট্রাভেল ডায়েরির প্রথম সম্পাদনা করেছিলেন, বুকাননের দ্বারা চিন্হিত অন্তিচকের মাটির ঢিবির নিচে অতীতের এই গৌরবপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবশেষ থাকার শত প্রতিশত দাবী করেছিলেন|
সময়ের প্রবাহের সাথে সাথে বিক্রমশিলার সঠিক অবস্থান খুঁজে বার করা আরও দুরহ হয়ে উঠে ছিল. আর এর প্রধান কারণ ছিল সংশ্লিষ্ট মানুষদের পরস্পর বিরোধী মতবাদ| তত্কালীন ভারত সরকারের মন্ত্রী এবং ভাগলপুর লোকসভা সদস্য, ভাগবত ঝা আজাদের প্রচেষ্টা তে আকলোগিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই)অন্তিচকে উৎখনন কাজ শুরুর প্রচেষ্টা নেয় এবং পাটনা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাথে যৌথ রূপে সন 1961 এ উৎখনন এর কাজ শুরু করে| আন্টিচক এর স্থানীয় বাসিন্দা, স্বগীয় এল কে মিশ্র মহাশয়ের অশেষ প্রয়াসের (উনি ক্রমাগত চিঠি ইত্যাদির মাধমে ভারত সরকার এবং ভাগবত ঝা আজাদ কে ঐ স্থানেতেই উৎখনন শুরু করার জন্য চাপ সৃষ্ঠি করেছিলেন)কথা এখানে না লিখলে, বিক্রমশিলার পুনর্জন্মের কথা অসমাপ্ত থেকে যাবে|
পাটনা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের (পোস্ট গ্রাজুয়েট), বিভাধ্যক্ষ্য, ডক্ট. বি পি সিনহা মহাশয়ের নেতৃত্বে অন্তিচকে উৎখনন শুরু হয় এবং 1972 তে আই এস আই, পাটনা সর্কিল এই উৎখননের কাজ নিজ হাতে নিয়ে নেন. ডক্ট. ভি এস ভার্মা মহাশয় এর নেতৃত্বে সন 1981 পর্য্যন্ত এই উৎখনন চলে| কিন্তু পয়সার অভাবে উৎখননের কাজ বন্ধ হয়ে যায় আর বিক্রমশিলার অসামপ্ত উৎখননের কারণে অনেক অজানা তথ্য আজ অনুত্তরিত রয়েছে|
গঙ্গা নদীর কিনারাতে অবস্থিত ইতিহাসের এই কিম্বদন্তী যেটা প্রায় নবম শতাব্দীর (এডি)পর থেকে দুনিয়ার নজর থেকে বিস্মৃত হয়ে গিয়েছিল (কেবল পুরাতন গ্রন্থের আর ইতিহাসের পাতাতে জীবিত ছিল), 1960 সালের পর এই উৎখননের পর পুনরায় দুনিয়ার সামনে উঠে আসে কিন্তু ব্রিটিশ যুগে নালন্দা সহ ভারতে বিভিন্ন অংশে যে সব পুরাত্বিক উৎখনন হয়ে ছিল এবং ইতিহাস সাপেক্ষে এই স্থানগুলির উপর যতটা কাজ হয়ে ছিল তার সিকি ভাগও কিন্তু বিক্রমশিলার উপর এ অব্দি হয় নাই|
অনেক অর্থে এই উৎখনন কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপিত হয়, বিক্রমশিলা নিয়ে বিগত সময়ে বিভিন্ন সনামধন্য লেখকদের মধ্যে যে ভুল ধারণা ছিল বা ওদের দ্বারা দুনিয়ার সামনে যে ভুল তত্ব পরিবেশন করা হয়ে ছিল সেটার উপর যবনিকাপাত হয়. যে হেতু এতদিন পর্যন্ত বিভিন্ন বৌদ্ধ গ্রন্থ বিশেষ করে তিব্বতীয় গ্রন্থ সমূহের সাহায্যে বিক্রমশিলা সম্পর্কে জনসমক্ষে যে অবধারণা তুলে ধরা হতো সেটা ইতিহাস (পুরাতত্ব) সাপেক্ষ্য ছিল না| কিন্তু বিক্রমশিলার ধ্বংশস্তুপ জনসমক্ষের সামনে আসার পর আগের প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণার অবসান হবার সাথে সাথে অতীতের এই অসাধরন জ্ঞানকেন্দ্রর বহু অজানা তত্ব ফের থেকে খুঁজে পাওয়ার আর এর উপর সামগ্রিক রিসার্চ করার নতুন রাস্তার ঠিকানা মিলতে শুরু করে|
পুরাতন তিব্বতীয় বৌদ্ধ ধর্ম গ্রন্থ সকল শুরু থেকেই এটা দাবী করে যে পাল যুগে নির্মিত বিক্রমশিলা (তত্কালীন বৃহত বঙ্গের মধ্যে অবস্থিত ছিল)| বিক্রমশিলা ছাড়া সম্রাট ধর্মপাল দ্বারা নির্মিত কিছু বিশিষ্ঠ বৌদ্ধ মহাবিহারের মধ্যে ওদন্তপুরী মহাবিহার (অধুনা বিহারের বিহারসরিফে, নালন্দা জেলা অন্তর্ভূক্ত যেটা অতীতে মগধ এর ক্ষেত্র সীমানার মধ্যে ছিল)এবং সোমপুরি মহাবিহার (অধুনা বাংলাদেশে)অতন্ত মহত্বপূর্ণ ছিল| কিন্তু এই রূপ সকল গ্রন্থ বা অতি পুরাতন নথিপত্র বরাবর এটা দাবী করে যে সেই সময়কার সকল বৌদ্ধ মহাবিহারের মধ্যে বিক্রামশিলার স্থান ছিল সর্বোচ্চে|
কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে কিছু পুরাতন সনামধন্য ইতিহাসকার/ লেখক আধুনিক স্থিতির ভিত্তিতে (প্রমান অভাবে বা অন্য কোনো স্বাথে)বিক্রমশিলার উপর যে সব তত্ব পরিবেশন করেছেন সেটা একেবারে ইতিহাস সাপেক্ষ্যিক নয় এবং সম্পূর্ণ রূপে ভ্রান্ত, এটা বিক্রমশিলার ধবংসাবশেষর উৎখননের সাথে সাথে প্রমাণিত হয়| কিন্তু এই রূপ লেখকদের দ্বারা অতীতে যে ভুল তথ্য তুলে ধরা হয়ে ছিল আর যে ভ্রান্ত পরিস্থিতি দুনিয়ার সামনে তুলে ধারা হয়েছিল, সেটা সাংঘাতিক ভাবে বিক্রমশিলার বাস্তু স্থতি কে প্রবাভিত করে ফেলেছে| এই রূপ বেশির ভাগ লেখা/ বই ইংরাজি তে, ইংরাজি আন্তর্জাতিক ভাষা হবার দরুন যে ভ্রান্ত ধারণা পুরো দুনিয়াতে সংক্রামিত হয়ে গেছে, সেটার দূর করা খুব সহজ নয়. আমরা সহজে অনুমান করতে পরি যে কি ভীষণ ক্ষতি হয়ে গেছে এ পর্যন্ত!
উদ্দেশ্যমূলক ভ্রান্ত ধরনার প্রচার :
এই ভাবে যা কিছু ভ্রান্ত ধারণা বিক্রমশিলার ক্ষেত্রে আজ দুনিয়ার সামনে রোয়েছে তার মধ্যে একটি অন্যতম হল দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ এর বক্তিগত জীবন ও ওনার জন্মস্থান| অতীতের কিছু সনামধন্য লেখকের সমান্য ভুলের জন্য এই মহামানবের জম্মস্থান আজ খুবি বিতর্কিত| অতীশের বৌদ্ধ ধর্ম সংক্রান্ত যাবতীয় অমূল্য বচন, উপদেশ, ওনার সম্পূর্ণ দর্শন, ওনার বৌদ্ধ ধর্মের উপর অবদান সহ ওনার জীবনের সম্পূর্ণ কর্ম ও সব কিছুর অনেক তথ্য, গ্রন্থ এবং বই দুনিয়ার বিভিন্ন ভাষাতে আজ আমাদের কাছে সহজ প্রাপ্য কিন্তু যা নেই সেটা হল ওনার বক্তিগত জীবন ও ওনার সঠিক জন্মস্থান| সবচাইতে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা হলো যে সব আধুনিক লেখক/ রিসার্চ স্কলার যারা অতীশের উপর কাজ করেছেন, ওনারা অতীশের জন্ম স্থান নিয়ে এক প্রকারে কোনো কাজই করেন নাই| ওনাদের ভুল তথ্য পরিবেসনার কারণে আজ দুনিয়ার সামনে বাংলাদেশ অতীশের জন্মস্থান. বাংলাদেশ ও আজ দুনিয়ার সামনে অতীশ কে নিয়ে খালি যে মাতামাতি শুরু করেছে শুধু তাই নয় বরঞ্চ চীনএর মত শক্তিশালী দেশের কাছ থেকে আর্থিক মদত পুষ্ঠ হয়ে অতীশের নামে দুনিয়াতে নিজের সংস্কৃতিক গতিবিধির পরিধি ক্রমাগত বাডিয়ে চলেছে|
এই প্রতিবেদনে News5PM এর এই রূপ সম্মানিত লেখক/ ইতিহাসকারদের প্রতি কোনো দুর্ভাবনা নেই কারণ ওনারা নিজ নিজ প্রতিভার দৌলতে দুনিয়াতে অনেক কিছু পরিবেশন করেছেন , যা অমূল্য সম্পদ| News5PM নিউজ ডেস্কের ওনাদের লেখার সততার উপর কোনো সন্দেহ নেই কারণ আমাদের এডিটোরিয়াল বোর্ড মনে করে যে এই রূপ লেখকগণ নিশ্চয় কোনো না কোনো উপযুক্ত সূত্রের সাহায্যে অতীশের জন্মস্থানই যে বাংলাদেশ সেটা দাবী কোরেছেন| ওনারা নিশ্চয় তিব্বতীয় গ্রন্থ ইত্যাদির সাহায্যে এই রূপ সিধান্তে খুব সহজে উপনীত হয়ে ছিলেন কিন্তু আমাদের কিছু প্রবীন দায়িত্বপূর্ণ সাংবাদিক গণ অতীশ সম্পর্কে প্রারম্ভিক কাজ শুরু করার পর কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে আসায় News5PM সম্পুর্নরূপে আসস্ত্ব হয় যে ওনাদের দ্বারা অতীশের জন্মস্থান খুব সহজ ভাবে বাংলাদেশ বলা টা একটা কাল্পনিক এবং কাকতালীয় ঘটনা মার্ত্র যার কোনো ইতিহাসিক প্রমান নেই|
নিসন্দেহে এই রূপ সনামধন্য লেখকদের বিরুদ্ধে News5PM এর এই দুশ্সাহসিক পদক্ষেপ নেওয়ার সিধান্ত কিন্তু কেবল মাত্র ইতিহাস যেটা বিকৃত করা হয়েছে ( কোনো অজ্ঞাত কারণে বা অন্য কোনো প্ররোচনাতে) সেটা সঠিক করা| আমারা অতীশের জন্মস্থল সম্পর্কে যে তথ্য পেশ করতে চলেছি সেটার বিবচনার ভার সম্পূর্ণ ভাবে আমরা আমাদের সম্মানিত সুধী পাঠকবৃন্দের কাছে তুলে দিতে চায়|
সত্যের সন্ধানে :
News5PM শিবশংকর সিং পারিজাত (ভূতপূর্ব ডেপুটি ডিরেক্টর, সূচনা এবং প্রসারণ বিভাগ, বিহার সরকার) কাছে বিশেষ ভাবে ঋনী| পারিজাত মহাশয় এবং স্থানীয় সুন্দরবতী মহিলা মহাবিদ্যালয় এর বর্তমান প্রাচার্য এবং ইতিহাসকার রমন সিনহা মহাশয় সংযুক্ত ভাবে অতীশ এর জন্মস্থান এর উপর সুদীর্ঘ রিসার্চ করছেন| পারিজাত মহাশয়ের লিখিত অতীশের উপর একটি সুন্দর বই (হিন্দিতে) ইতিহাস প্রেমীদের কাছে খুব জনপ্রিয়তা লাভ করেছে|
বিভিন্ন বই এবং পুরাতন গ্রন্থ সহিত রেরিচ এর (Roerich’s) ‘ দি ব্লু এনাল্স’ ( The Annals of ‘Gos-lo-tsa-ba) খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে News5PM এর এই প্রবন্ধ ছাপাতে. অবশ্য আমরা আজ অব্দি জেনে এসেছি যে বাংলাদেশের ঢাকার নিকট বিক্রমপুর অতীশের জন্মস্থান, যেটা বিভিন্ন লেখকগণ ও বলে এসেছেন| কিন্তু পারিজাত ও সিনহা মহাশয়ের প্রারম্ভিক রিসার্চ অনুসারে ওনারা অতীশের মূল জন্মস্থান হল বিহারের ভাগলপুর (ভাগলপুর অবশ্যই প্রাচীন কালে বৃহত বঙ্গের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল)|এনারা বহু সংলিষ্ট নথিপত্র এবং প্রাচীন তিব্বতীয় গ্রন্থ সমূহের অবলোকনে এই সিধান্তে উপনীত হয়েছেন. এক সংযুক্ত বিবৃতির মাধমে এনারা ডিরেক্টরেট অফ অরকেলোজি, পাটনা, কে যে এ বিষয়ে অবলোকন করে যথা যুক্ত বাবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন|
অতীশ এক বিদ্বান বৌদ্ধ সন্নাসী (monk) ছিলেন যিনি বৌদ্ধ ধর্মাম্বলী দের নিকট এক পবিত্র দেবতা স্বরুপ, লামাবাদ এ দীক্ষিত বৌদ্ধ ধর্মাম্বলীরা এনাকে নিজদের কুলদেবতা বলে পূজা করে থাকেন| তিনি বিক্রমশিলার একজন আচার্য ছিলেন কিন্তু নিজ মেধা বলে তিনি পরে প্রধান আচার্যএর পদ বিভূষিত করেন এবং ওনাকে শ্রোদ্ধেয় নরো-পা (Naro-Pa), বৌদ্ধ আচার্য, দ্বারা ‘বৌদ্ধ ধর্ম মন্ত্রী’ (Minister of Religion of Buddha) আসন প্রদান করা হয়|সকল তিব্বতীদের কাছে ‘মহান প্রভু’ রূপে অতীশ আজও পূজিত| বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি অতীশের যে কতটা অবদান সেটা সামান্য কিছু লাইনে লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয়| তিব্বতী নরেশের আমন্ত্রণে উনি তিব্বতে গিয়ে ঐ ভয়ংকর হিমঝঞ্ঝাবাতের দেশে 13 বছর কাটিয়ে বিলুপ্তির পথের বৌদ্ধ ধর্ম কে পরিমার্জিত করে দুনিয়ার সামনে পুনর্জীবিত করেন| আজ দুনিয়াতে যে বৌদ্ধ ধর্ম টিকে আছে, সেটা অতীশের জন্যই সম্ভব হয়েছে|
পারিজাত এবং সিনহার অনুমান অনুযায়ী অতীশের মূল জন্মস্থান কল্যানপুরে যার বর্তমান নাম আজ ওলপুরা এবং জায়গাটি ভাগলপুর জেলা মুখ্যালায় থেকে প্রায় 25 কিলোমিটার পূবে অবস্থিত| অতীশের পিতা ছিলেন কল্যানশ্রী যিনি ‘সাহোর’ (Sahor) বা জাহোর ( Jahor) নামক কোনো এক স্থানীয় স্থানের রাজা ছিলেন| প্রভাবতী ছিলেন অতীশের মা| প্রাচীন তিব্বতী গ্রন্থের অনুসারে, অতীশ মাতা পিতার দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন এবং জন্মের পর ওনার নামকরণ হয় ‘চন্দ্রগর্ভ’ এবং যে প্রাসাদে বালক চন্দ্রগর্ভ থাকতেন সেটার নাম ছিল ‘ কাঞ্চনধ্বজ’|
আজকের ওলপুরার কিন্তু সরকারি দস্তাবেজে (ল্যান্ড রেকর্ড এ) কল্যাণপুরের নামে চিন্হিত এবং বিহার সরকারের সার্ভে রিপোর্ট 1971-72 তে কল্যাণপুর রূপে পাওয়া যায়. শ্রী পারিজাত সন 1847-48 এক পুরাতন সরকারি নক্সা (published by A W Samrt, extra superintendent of survey in-charge, camp No-2, and Party No-4) থেকে ঐ স্থানটির নাম কল্যানপুর হিসাবে পান| এ ছাড়া গ্রামটির আশেপাশে আজ প্রচুর পুরাত্বাতিক অবশেষ মাটির নিচে থেকে পাওয়া জায়. আগে প্রচুর পাল কালীন মূর্তি সহিত অপূর্ব এক আবলোকিতেশ্বরের মূর্তি মাটির নিচে থেকে পাওয়া গিয়াছিল কিন্তু দুর্ভাগক্রমে মূর্তিটি চুরি হয়ে যায়| গ্রামের মানুষ আজও বাইরে থেকে কোনো আগুন্তুক গেলে গ্রামের প্রাচীন পুকুরের পাশে এক বৃহৎ উচু স্থান দেখায় যেটা খুব সুক্ষ ভাবে দেখলে পরিস্কার বোঝা যায় যে স্থানটি অতীতের কোন বিশাল মহলের অংশ কারণ আজ মাটির নিচে মহলে ভিত এর নিদর্শন পাওয়া যায়. পাল কালীন ইটা দ্বারা এই ভিত নির্মিত|
অযুক্তিকর দাবী :-
অতীশের জন্মস্থান নিরুপনে বৌদ্ধ ধর্মের বিখ্যাত লেখক সহ ব্রিটিশ কুটনীতিক, সরৎ চন্দ্র দাস ওনার বিখ্যাত রচনা “ Indian Pandits in the land of snow” (হিম প্রদেশে ভারতীয় পণ্ডিত) তে উনি সর্ব প্রথম বলেন যে অতীশ বাঙালদেশের বিক্রমপুরে জন্ম গ্রহন করেছিলেন|উনি এটাও লেখেন যে স্থান টি বিক্রমশিলার খুব কাছে ভাগল নামক শহরের কাছে অবস্থিত| দাসের এই বই টি সন 1893 তে প্রকাশিত হয়ে ছিল| এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যে ঐ সময়ে যে হেতু বিক্রমশিলা মহাবিহারের উৎখনন হয় নাই এবং কেউ ই এর সঠিক ভৌগলিক অবস্থানের বিষয়ে সম্পূর্ণ ওয়াকবিহাল ছিল না| দাসের Indian Pandits in the land of snow বই টি (ইংরাজিতে হবার কারণে) দুনিয়াতে আলোড়নের সৃষ্ঠি করে কিন্তু এটা নিশ্চয়ই বিক্রমশিলার বড় এক দুর্ভাগ্য যে, বইটি আজ অব্দি বিক্রমশিলা এবং সময়িক তিব্বত কে জানার জন্য এক অনবদ্য রেফারেন্স বই| কেবল দাসই নন, অন্য এক বৌদ্ধ ধর্মের পণ্ডিত, সুকুমার দত্ত বিক্রমশিলা সম্পকে ঠিক এই রূপ ভুল অবধারণা প্রকাশ করেন| দত্ত বিক্রমশিলার ভৌগলিক অবস্থান বাংলাদেশের রাজনৈতিক সীমানার মধ্যে হবার কথা দাবী করেন|
শ্রীমতি অলকা চট্টোপাধ্যায় ওনার বই, ‘ Atisa and Tibet’ (1967) , Page-22 তে লিখেছেন যে : “ A part perhaps from a mound in Vajrayogini village, Vikramapura, Dacca, to which conventionally bow down as the residence of Atisa (বাংলায় : অতীশের ভিটা), nothing concrete survives in the country of his birth to commemorate him. The archaeologists yet to identify the site of Vikramshila Vihara, which, we known from the Tibetan sources, was the principal center of his later activities as a Buddhist monk in India”|
আশ্চর্য্য ভাবে, শ্রীমতি চট্টোপাধ্যায় খুব সহজ ভাবে সোজা বাংলাদেশ কে অতীশের জন্মস্থান হিসাবে মেনে নিলেন এটা জেনেও যে স্থান টি বিক্রমশিলা বিহারের নিকট অবস্থিত ছিল|সত্যই এমন একজন সনামধন্য লেখিকা যখন বিক্রমশিলার সঠিক ভৌগিলিক অবস্থ্যান সম্পকে সম্পূর্ণ রূপে অনভিজ্ঞ, তখন ওনার এই রূপ মতবাদ দেওয়াটা খুবই হাস্যকর|
চাঞ্চল্যকার বিতর্ক :
পুরাতন লেখকদের দ্বারা অতীশের জন্মস্থান সম্পর্কে সবচাইতে মজাদার বিতর্কের নিদর্শন হলো নির্মল চন্দ্র সিনহা, সহকর্মী রয়েল জিওগ্রাফিক সোসাইটি সহ মেম্বার রয়াল সেন্ট্রাল এশিয়ান সোসাইটি, লন্ডন এবং নামগ্যাল ইনস্টিটিউট অফ টিবেটওলজি, গ্যাংটক, সিকিম দ্বারা লেখা একটি বিবৃতি| সিনহা খুব সম্ববত দাস মহাশয়ের বই- Indian Pandits in the land of snow এর পুনর্প্রকাশন এডিশন (1965)তে ইন্ট্রোডকটারি নোটস লিখেছিলেন| দাস মহাশয়ের অতীশএর জন্মস্থান নিয়ে যে অবধারণা প্রকাশ করেছিলেন সেটা সিনহা পরিস্কার ভাবে নাকচ করেন নিজের ইন্ট্রোদাক্তরী নোটসএ ঐ বই তে, ইহা একটি অভিনব হাস্যকর ঘটনা!
সিনহা দাস মহাশয়ের বই তে ইন্ট্রোদাক্তরী নোটসএর কিছু অংশ সুধী পাঠকদের কাছে তুলে ধারা হলো : “ The term Bengali used for Atisa and many other scholars from eastern India will not be appropriate. The expressions Bengal and Bengali had varying connotation would not be the same for the years 1893 (when ‘Indian Pandits in the land of snow’ was published) and 1911 (when the provinces of Bihar and Bengal was separated). The Tibetan description of the relevant parts of Eastern India has been consistently Vangla and this perhaps gives a better perspective of Indian history than the modern words Bihar and Bengal. Das believed that Dipankara Srigyana Atisa was a Bengali and a native of Vikrampur (Dacca :East Pakistan). In the later days this was contested by Rahul Sankritrayana (d. 1963), another great Tibetan scholar from India. Sankritryana held that Atisa was a native of Bhagalpur (Bihar)” শ্রী সিনহা লিখেছিলেন in page- VII দাস মহাশয়ের ঐ রিপ্রিন্ট এডিশনএ|
উনি আরও বোলেন যে : “ Atisa spent three rainy seasons at Trag-yerpa and expounded the Kalchakra there| From my visit to the famous monastery and many Lamas there and the elsewhere in Tibet I can only confirm that Atisa was a native of Vangla and that his birthplace was towards the east of Vajrasana (ie Bodh Gaya in Bihar). Vangla, as a distinct culture entity in Tibetan mind, roughly stretched from confluence of Ganga and Brahmaputra. The Buddhist centers of learning were located in Vangla and Vajrayana was the dominant cult all over Vangla; one should not abet the Pala empires as Bengali and Bihari; and one should not look for (modern) Bengali or Hindi in Dohas composed by the Siddhas of Vajrayana” (page-vii & viii).
“Sarat Chandra Das obviously planned his lectures in answer to the specific requirement of his audiences the presentation was much in anecdotal pattern and no modification was made in the time of publication. Tibetan words and names were rendered Mongol or Manchu from of Tibetan designation were used” (page-ix).
রাহুল সাংকৃত্যায়ন ও দাস মহাশয়ের ন্যায় তিব্বত পরিভ্রমন করেছিলেন| তিনি নিজের একটি বইতে, “পুরাতত্ব নিবান্ধাবালি”(হিন্দি) র ‘সাহোর এবং বিক্রমশিলা’ নামক চ্যাপ্টারএ অতীশের জন্মভূমির খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন| ওনার হিন্দি বই থেকে অনুবাদের অংশ : “ আধুনিক কালে শ্রী এস সি দাস একজন প্রথম ভারতীয় যিনি তিব্বতের সংস্কৃতি এবং ভাষার উপর ব্যাপক রূপে অনুসন্ধানমূলক কাজ করেছেন| তিনি দাবী করেন যে প্রখর বিদ্বান এবং মহান দার্শনিক, শান্তারারক্ষিত (অষ্টম শতাব্দী এডি)যিনি প্রথম তিব্বতী (ধর্ম) প্রচারক, (তাত্বসংরাকারক), নালন্দা মহাবিহারের প্র্চার্য্য ছিলেন উনি একজন বাঙালি ছিলেন| ঘটনাক্রমে, ডা. বিনায়তোশ ভট্টাচার্য মহাশয় এস সি দাস কে অনুসরণ করে ‘তত্বসংগ্রহ’ প্রবন্ধের ভূমিকাতে সাহোর কে সাভার বলেছেন যেটা বিক্রমপুর পরগনার বাংলাদেশের ঢাকা জেলা তে অবস্থিত| ডা. ভট্টাচার্য এর এই মারাত্বক ভুল খুব স্বাভাবিক কারণ সম্ভবত উনি হয়ত মূল তিব্বতীয় গ্রন্থ অবলোকন করতে পারেননাই|কিন্তু সব চাইতে আশ্চর্য্যপূর্ণ ঘটনা হল যে দাস মহাশয় এবং মহপাধ্যায় সতীশ চন্দ্র বিদ্যাভূষণ দের মত বিদব্তজনেরা কি ভাবে এত সহজ সরল তথ্য গুলি কে নাজরান্দাজ করে এর রূপ ভ্রান্তিকর মতামত পেশ করলেন? আমরা মনে করি সম্ভবত দুটি কারণ হয়ে থাকতে পারে- প্রথম ওনারা খুব সম্ভবত সংলিস্থ মূল নথিপত্র অবলোকন করেননাই ( দেখাগিয়াছে অনেক বাঙালি লেখক যারা এ বিষয়ে কিছু লিখেছেন, অধিকাংশই দাস মহাশয়ের মত লেখকদের মতামত কেবল কপিপেস্টই করে গেছেন| আর দ্বিতীয় কারণ হলো ‘সাহোর’ বা ‘ভাগল’ এর মত শব্দ গুলি, যেমন ভাগল কিন্তু ভাঙ্গল বা বাঙাল এর কাছাকাছি, অতএব ভাঙ্গল মানে বাংলা এই রূপ মনোভাব ধারণ করে এই লেখক গণ এক ভ্রান্ত ধারণার সূত্রপাত করে গেছেন|
সত্যের কাছাকাছি :
রাহুল সাংকৃত্যায়ন বিভিন্ন প্রাচীন তিব্বতীয় সুত্র, গ্রন্থ এবং ওখানকার স্থানীয় জনশ্রুতি থেকে অতীশের ইতিহাস সংগ্রহ করতে চেষ্টা করেছিলেন. এদের মধ্যে, তিব্বতীয় বৌদ্ধ গ্রন্থ, ‘দাং’ হচ্ছে প্রমুখ যেটা সাংকৃত্যায়ন লাসার নিকট স্থিত তিব্বতের একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার ‘চুন-য-লিন্ড-গুম্বাবিহার’ তে প্র্য়েছিলেন|
এই গ্রন্থের কে আধার করে উনি লিখেছিলেন “ (পৃষ্ঠ সংখা 152-192) অতীশের সংস্কৃত তে তিব্বতী অনুবাদ যাকে তিব্বতে ‘ দাপাল-মার-মে-মাজাদ-যা-সেস’ বলা হয়| তিব্বতীরা অতীশ কে ‘জো-বো’ (পন্ডিত ব্যক্তি) রূপে সম্বধিত করে থাকে…..যেই স্থান যেখানে অতীশ জন্ম গ্রহন করেছিলেন (i) সাহোর, ভারতে পূর্ব দিকে, সেই স্থানের নিকট (ii) একটি ভাঙ্গল নামক একটি বড় ‘পুর’ (নগর) ছিল…… কাঞ্চনধ্বজ (গ্সার-গিয়া-ময়াল-মাছন) নামক একটি বিশাল মহল সেই স্থানে ছিল যেখানে অতীশ জন্মে ছিলেন……পিতা ছিলেন রাজা কল্যাণশ্রী (দাপাল- মোড-জের-চান) …..মা শ্রী প্রভাবতি (দাপাল-মোড-জের-চান)….. ঐ দম্পত্তির (একটি) ছেলে(জল পুরুষ)-অশ্ব (ঘোড়া)- বর্ষ(বছর)- (ছো-ফো-তার-লো= মান্মাথ সম্ভ্ত্সার ১০৩৯ বিক্রামব্দ৯৮২ ……(পৃষ্ঠা -153) ঐ প্রাসাদ কাঞ্চনধ্বজ ( থেকে অল্প নাতিদুর (অল্প দুরত্বে)একটি বিহার (গুচুগ-লাগ-খাং) অবস্থিত ছিল যার নাম ছিল (মে-রিং-ভো শিগ –ভো)-বিক্রমপুরি (?বিক্রমশিলা) ……. পাঁচ শত রথ নিয়ে রাজা (কাল্যান্শ্রী) ঐ বিহারে গিয়েছিলেন…… যেটারী র (অতীশের গুরুর) বাড়ি ঐ স্থান থেকে খুব অল্প দুরে ছিল, যেটা উনি শুনে ছিলেন ……” (পৃষ্ঠা- 270- 271)|
সাংকৃত্যায়ন অনুসারে (দে-পুং) কেবল লাসাতে নয় বরং পুরো তিব্বতে সব চাইতে বড় বৌদ্ধ বিহার | পঞ্চম দালাই লামা ( বল-বা –জং- গর্য –মাছো) – (সুমতি সাগর 1618-84) ওখানকার প্রধান ভিক্ষুক ছিলেন| ‘জাউ’ নামক একটি অতিপ্রাচীন ধার্মিক পান্ডুলিপিতে, যেটা অতীশের (গুরু-গুন ধার্মাকার)- আত্মজীবনী (বল-মাই-য়ন-টান-ছশ –কিয়াং-আব্যুং-গানস)এর অনুসারে :-
“ (পৃষ্ঠা -1)তথায় সাহোর নামক রাজ্যে ভাঙ্গল নামক একটি শহর ছিল, দেশের (ভারতের) পুর্ব দিশা তে| রাজা ছিলেন কাল্যান্শ্রী ….প্রাসাদ ছিল কাঞ্চনধ্বজ….এক লক্ষ পরিবার ছিল ঐ দেশে…..রানী ছিলেন শ্রী প্রভাবতী….(6) বিক্রমপুরি (?বিক্রমশিলা) ঐ প্রাসাদের উত্তর দিশা তে অবস্থিত ছিল….. নিজ মাতাপিতার সঙ্গে শিশু চান্দ্রগর্ভা (অতীশ) পাঁচ শত রথ নিয়ে ঐ বিহারে (? বিক্রমশিলা) গিয়েছিলেন…..ধার্মিক অনুষ্ঠান শেষ হবার পর ঐ দিনই বিকালে ঐ বিহার থেকে ফিরে এসেছিলেন……..(পৃষ্ঠা-271)|
ঐ গ্রন্থে দেখানো হয়েছে যে একদা ভিক্ষুক হবার কারণে কি ভাবে অতীশ নালন্দা গিয়েছিলেন, তিনি ওখানে নিজ পরিচয় দিয়েছিলেন এই ভাবে (পৃষ্ঠা- 9) …….আমি ভাঙ্গল এর রাজপুত্র এবং কাঞ্চনধ্বজ প্রাসাদ থেকে এসেছি……| (পৃষ্ঠা-271)
ঐ ‘জাউ’ নামক গ্রন্থের যেটি কে বলা হয় (জো-ভো-দ্পাল-লদান-মাং-মযাদ-মে-সেশ-কই-নরম-থার-গর্যাস-পো), চতুর্থ অধ্যায়ে অতীশের বৃহত জীবনী দেখানো হয়েছে :- (পৃষ্ঠা -21) (8)ভাঙাল রাজ্য বজ্রাসন (অধুনা বোধ গয়া) এর দক্ষিন-পশ্চিমে অবস্থিত ছিল| বিক্রমপুরী ভাঙ্গল দেশের একটি বড় শহর ছিল| ঐ দেশে সাহোর নামেও পরিচিত ছিল…..যার মধ্যে বিক্রমপুরী নামক একটি শহর অবস্থিত ছিল….” (পুনরায় পৃষ্ঠা সংখা -22) পূর্ব দিশা তে সাহোর নামক একটি দেশ ছিল যাতে একটি বড় শহর ছিল বিক্রমপুরী নামক……..”|
(পৃষ্ঠা -272) লামা (কুন-মাক্যয়ান-পদ-মাদকার-পো) ও লিখেছেন যে :-“ অতীশ ও সেই বংশে জন্মগ্রহন করেছিলেন যে বংশে বোধিসত্ত্ভা শান্ত্ররাক্ষিত ও কাঞ্চনধ্বজ প্রাসাদ যাহা ভারতের পূর্ব দিশা তে ছিল, জন্মগ্রহন করে ছিলেন…..|
উপরোক্ত সকল গ্রন্থ ইত্যাদি থেকে প্রাপ্ত তথ্যআদি থেকে সাংকৃত্যায়ন দাবী করেন যে :-
“(1)সাহোর ভারতবর্ষের পূর্ব দিশা তে অবস্থিত ছিল.. (2)এর অপর নাম ভাঙ্গল বা ভাগল ছিল ….(3)বিক্রমপুরী ছিল রাজধানী যাকে ভাঙ্গল বা ভাগলপুর বলা হতো ….(4)ঐ রাজধনী ছিল (ভান্গালপুর বা বিক্রমপুরী) যা রাজপ্রাসাদ থেকে খুব অল্প দুরত্বে অবস্থিত ছিল আর এর উত্তর দিশা তে একটি বিক্রমপুরী বা বিক্রমশিলা ছিল (5) এই বিক্রমশিলা অতীশের জন্মস্থান থেকে খুবই কাছে ছিল……
ভুল যুক্তি ? :
অন্য এক বিখ্যাত লেখিকা (বৌদ্ধ এবং বৌদ্ধ ধর্মের বিশেষজ্ঞ) মাননীয়া অলকা চট্টপাধ্যায় কিন্তু সাংকৃত্যায়ন এর দাবী কে নিজের বিখ্যাত বই ‘ Atisa and Tibet’ (1967) তে সম্পূর্ণভাবে খারিজ করেছেন| তিনি এক প্রকারে পরোক্ষভাবে সাংকৃত্যায়ন কে আক্রমন করেছেন : “…. যেহেতু সাংকৃত্যায়ন কখনই সেই তিব্বতীয় সূত্রের কথা পরিস্কার ভাবে বলেন নাই যার উপর ভিত্তি করে উনি এই রূপ মন্তব প্রকাশ করেছেন. এছাড়া, ওনার এই রূপ মন্তব (দাবী) কিন্তু সম্পুর্ন রূপে অন্য সময়িক লেখক /গ্রন্থকারেদের মতের বাইরে অতএব আমাদের ওনার (সাংকৃত্যায়ন এর) দাবী কে ঠুকেবাজিয়ে দেখতে হবে, অন্তত কোনো ‘বৈকল্পিক’ তিব্বতীয় সুত্র থেকে….” মজাদার কথা হলো যে মাননীয়া অলকা মহোদায়া জোরের সাথে দাবী করেছেন যে অতীশের জন্মস্থল হলো বাংলাদেশের বিক্রমপুর কিন্তু উনি কোথায় এটা বলেননি যেওনার এই দাবীর ভিত্তি কি , কিসের আধারে উনি এই রূপ দাবী করেছেন? তিনি খুব সুন্দর ভাবে এটাকে সম্পূর্ণ রূপে এড়িয়ে গেছেন| বরঞ্চ উনি অন্যানো লেখক দের ন্যায় সাহোর কে বাঙালদেশের ভৌগলিক সীমার মধ্যে দেখিয়ে বা ভারতের কোনো পশ্চিম প্রান্তে দেখাবার চেষ্টা করেছেন|
সত্যের জন্য যুক্তি :
তিলকা মাঝি ভাগলপুর বিশ্ববিদ্যালয়, ভাগলপুর (বিহার)এর ভূতপূর্ব অধ্যক্ষ সহ বিক্ষ্যাত ইতিহাসবিদ , স্বগীয় প্রফেসর রাধাকৃষ্ণ চৌধূরী নিজের বিখ্যাত বই ‘The University of Vikramshila’ (published by the Bihar Research Society, Patna, 1975), অতীশের জন্মস্থান নিয়ে এই রূপ ভ্রান্ত ধারণা তৈরী করার জন্য ক্ষেদ প্রকাশ করে এই রূপ লেখকদের ব্যাপক আলোচনা করেছেন| স্বগীয় চৌধূরী, নিখিল চন্দ্র সিনহার কথা তুলে ধরেছেন যা সিনহা মহাশয় এস সি দাস এর বই (দ্বিতীয় সংস্করণ) এ প্রাস্তাবনায় লিখেছিলেন|
স্বগীয় চৌধূরী অলকা চট্টপাধ্যায়এর বিবৃতির সম্পূর্ণ ভাবে আলোচনা করেছেন এবং সাংকৃত্যায়নএর দাবী কে যুক্তিকর মনে করে অতীশের জন্মস্থান ভাগলপুর জেলা বলে বলেছেন|
“যদিও অলকা চট্টপাধ্যায়এর বই ‘Atisa and Tibet’ অতীশ ও সমসাময়িক স্থিতি কে জানার জন্য এ অব্দি সবচাইতে সঠিক এবং গুরুত্বপূর্ণ তত্য সমগ্র কিন্তু এই বই এর কিছু জিনিস অবাস্তব, মেনেনেবা যায় না কারণ এই তত্যগুলি আঞ্চলিক আনুগত্য দ্বারা বেশী রঙ্গিন করা হয়েছে….,” স্বগীয় চৌধূরী নিজের বই এর টিকা তে লিখেছে (পৃষ্ঠা-10)|
পারিজাত মহাশয় নিজের বই অতীশ এর জীবনী (হিন্দি)কিছু অংশ উধৃত করে বলেন যে চৈনিক পরিব্রাজক সহ নালন্দা বিহারের (বিশ্ববিদ্যলয়)এর ছাত্র, ইত-সিং এবং অনার অন্যানো সহপাঠি শান্তারক্ষিত কে ‘ভাগল’ বলে সম্বোধন করতেন| এই রূপ সম্বোধন করার কারণ ছিল যে শান্তারক্ষিত যিনি অতীশের বংশভূত ছিলেন এবং ভাগলপুর নামক স্থানের মূল নিবাসী ও ছিলেন| পারিজার মহাশয়ের এই বিবৃতি থেকে আমরা সহজে অতীশের মূল নিবাস স্থলের সহজ অনুমান করতে পারি|
প্রফেসর রমণ সিনহা তিব্বতী টান-জ্ঞুর, যা মুখ্যত ভারতীয় রচনার অনুবাদ, উল্লেখ করে বলেন যে বিক্রমশিলা গঙ্গা নদীর কিনারাতে অবস্স্থিত ছিল আর অতীশের জন্মস্থল সাহোর নামক স্থানে যেটি অধুনা ভাগলপুর জেলার সাবৌর অঞ্চল| “শিশু চন্দ্রগর্ভ (অতীশ) কে নিয়ে ওনার মাবাবা রাজপ্রাসাদ থেকে বিক্রমশিলা তে কিছু অনুষ্ঠান করতে একদা নিয়ে গিয়েছিলেন এবং বিকেলের মধ্যে ফিরেও এসে ছিলেন. অতএব অতীশের নিবাসস্থল থেকে বিক্রমশিলার দুরত্ব খুব একটা দুইর ছিল না কারন তখনকার দিনে যাতায়াত ব্যবস্থা আজকের মত ছিল না| “ যদি অতীশের ঐ নিবাসস্থল বাংলাদেশে অবস্থিত হতো তবে কি তখনকার সেই পরিস্থিতি তে বাংলাদেশ থেকে বিক্রমশিলার দুরত্ব (900-1000 কি.মী.) এক দিনেতেই খুব সহজে যাওয়া আসা করা সম্ভব ছিল ?” প্রফেসর সিনহার যুক্তিপূর্ণ প্রশ্ন অতীশের মূল নিবাস স্থলের বিবাদের দিকে মহত্বপূর্ণ ভাবে আলোকপাত করে|
ভাষাগত পার্থক্য :
আমাদের ভাষাগত বিশ্লেষণ এর কথা মাথায় রেখে বুঝবার চেষ্টা করা উচিত যে এস সি দাস এর ন্যায় বিভিন্ন লেখক কিন্তু সেই রুপ তিব্বতীয় গ্রন্থ/ পান্ডুলিপি / বই/ পুথি ইত্যাতির সাহায্যে নিজেদের রচনা তৈরী করেছেন যে গুলোর প্রথমে সংস্কৃত থেকে তিব্বতী ভাষাতে তে অনুবাদ হয়েছে আর তার পর তিব্বতী থেকে সংস্কৃততে বা অন্যানো ভারতীয় ভাষাতে| যে হেতু সেই সব মূল সংস্কৃত পান্ডুলিপি /গ্রন্থ ইত্যাদি সময়ের অবক্ষ্যেপে বিনিস্ট হয়ে গেছে বা আজ আমাদের হাতে আর নেই, অতএব অতীশ বা ওনার সেই সমসাময়িক ইতিহাস এর স্রোত কিন্তু একমাত্র সেই সব তিব্বতি অনুবাদ সকল| যে হেতু তিব্বতী ভাষার উচ্চারণ (phonetic and pronunciation) ভারতীয় কোনো ভাষা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন, খুব সম্ভবত ভারতীয় মূলের কোনো লেখক এর এই রূপ অনুবাদ থেকে কিছু লেখার সময় উচ্চারণগত ভুল হওয়া টা খুব স্বাভাবিক| আর ঠিক এটাই হয়েছে এই প্রকরণে যা বিভিন্ন বিভ্রান্তির সৃষ্ঠি করেছে অতীশ সম্পর্খে| এর একটি খুব সঠিক উদাহরণ হলো ‘সাহোর’ বা ‘যাহোর’ শব্দ|
‘বস টান-জ্ঞুর’ মূলত ভারতীয় রচনা সমগ্রের অনুবাদ বা ‘ব্রম-স্টন-পা’, অতীশের এক অন্যতম শিষ্যের রচনার অনুবাদ বা ‘জায়াসিলা র নাগ-তশ’ ( এটি কে তিব্বতীয় ইতিহাসকারেরা মনে করেন অতীশ কে জানার সবচাইতে খাঁটি আর সেরা উৎস) ‘যাহোর’ নামক স্থানের উপর বেশি ইঙ্গিত করেছে যেটা কে বিভিন্ন লেখকগন বাঙ্গালাদেশের অঙ্গ বলে দাবী করেন. কিছু পুরাতন লেখক, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী বা এস কে দে মহাশয় তিব্বতী গ্রন্থের উপর ভিত্তি করে দাবী করেছেন যে ‘যাহোর’ বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমার মধ্যে অবস্থিত| কিন্তু আমরা জানি তিব্বতী উচ্চারণে ‘স’ কে ‘য’ বলে উচ্চারিত করা হয়, অএব লেখকদের দাবী কতটা ন্যায় সঙ্গত? সবচাইতে বড় প্রশ্ন হলো বা টান-জ্ঞুর কিন্তু অতীশ কে বাঙালি বলে দেখায় নাই, কেবল বলেছে যে “ একটি পণ্ডিত বাঙাল থেকে এসেছিলেন ….”|
দ্বিতীয়ত, বিক্রামশিলা এবং অতীশ এর সময়কাল পাল যুগের সময়ের| এই পাল যুগেই কিন্তু বিভিন্ন ভাষার উৎপত্তি হয়েছিল প্রতো -বেঙ্গলি থেকে.ইতিহাসের এই সময় খন্ডে বাঙাল ভাষা নিজের স্বরূপে আসতে শুরু করেছিল (অবশ্য পশ্চিম থেকে , সিন্ধু সভতার শেষ দিকে যে একটা অনায্য গোষ্টির যাকে আউটার এরিয়ান বা বার্তআর্য বলা হয়, দের পূর্ব দিকে যাকে আমরা বৃহত বঙ্গ বোলি, একটা মাইগ্রেশন হয়ে ছিল, তাদের ভাষা কিন্তু আদি বাংলা ছিল)| বিশেষ করে প্রাচীন মাগধী-প্রকৃত বা মাগধী-অপভ্রান্স বাংলা ভাষা কে এক প্রকারে পরিস্কৃত করেছে|হিন্দি, মৈথিলি বা বিহারারের অঙ্গ প্রদেশ (ভাগলপুর) এর লোকাল জনভাষা (ডাইলেক্ট) এর থেকে জন্ম নিয়েছে| এই ভাষার গুলো উত্পত্তি স্থল নিশ্চয় বাংলাদেশে নয়, এই অঞ্চল যেখানে বিক্রমশিলা ছিল (অবশ্যই বৃহত বাংলার ভৌগলিক ক্ষেত্রের মধ্যে)| অতীশ এর ভাষা নিশ্চই সংস্কৃত ছিল (বিক্রমশিলার অফিসিয়াল লেনগুযেজ) কিন্তু আমাদের এটা মনে রাখা দরকার যে সে যুগে বিক্রমশিলা অঞ্চলে হিন্দি ভাষার নিশ্চই কোনো প্রয়োগ ছিলনা আদি বাংলা চলন ছিল এ অঞ্চলে| তবে এই বাংলার সাথে স্থানীয় অঙ্গিকা ডাইলেক্টএর আজও প্রচুর সদৃশ্য রয়েচে|
উদাহরণ স্বরূপ, অলকা চট্টপাধ্যায়এর বই ‘Atisa and Tibet’ এ (পৃষ্ঠা-61, চ্যাপ্টার-6) এ লেখিকা এস সি দাসের বই কে উধৃত করে লিখছেন যে অতীশ প্রায় “অতি ভালা ! অতি মঙ্গলা !” বলে থাকতেন| অতি ভালা র উচ্চারণ সে যুগের সংস্কৃত মিশ্রিত হিন্দির খুব নিকট আর বলতে পারা যায় যে ঠিক অঙ্গিকার ভাষার উচ্চরণের মত| কিন্তু যদি এই শব্দের বাংলা উচ্চরণ দেখা যায় সেটা কিন্ত হবে- অতি ভালো , অতি ভালা কখনো নয়! পাল যুগে বাংলার ভৌগলিক যে সীমা ছিল তা গঙ্গা নদীর পশ্চিমে বিহারের লক্ষীসরাই (পালদের সামরিক কোয়ার্টার ব জয়স্কান্দাবার ছিল, সম্প্রতি বিহার হেরিটেজ সোসাইটি এবং বিশ্ব ভারতী বিশ্ব বিদ্যালয়, শান্তিনিকেতন এর যৌথ উৎখননের প্রয়াসে পাল কালীন একটি নুনারী (মহিলা বৌদ্ধিস্ট সন্নাসী দের বিহার সহ পাথর দ্বারা বিভিন্ন মূর্তির নির্মানের কারখানার অবশেষ) ইত্যাদি পাওয়া গিয়াছে| এই লক্ষীসরাই এর কিউল নদী ওপার থেকে মগধ এর সীমা শুরু হতো| লক্ষীসরাই কিন্তু এই অঙ্গ প্রদেশের অংশ|
অতীশ যে বাঙালি ছিলেন তার কোনো সন্দেহ নেই| তবে তিনি সেই অঞ্চলের নিবাসী ছিলেন যা আজ পূর্ণ রূপে গোবলয় এবং হিন্দি ভাষা প্রধান জায়গা, তিব্বতীয় নথি পত্রের অনুসারে এটা বলা যেতে পারে|আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা যে অতীশের নিবাস বা কর্মক্ষেত্র কিন্তু অতীতে প্রাচীন বাঙ্গালারি প্রচলন ছিল জনসাধারণের মধ্যে|
আন্তজাতিক রাজনৈতিক চক্রান্ত :
অতীশের নিবাসস্থলএর ভুল ঠিকানা কিন্তু এক আন্তজাতিক রাজনীতির জন্ম দিয়েছে| বাংলাদেশের বিক্রমপুর কে অতীশের জন্মস্থল হিসাবে পেশকরা দাবী কিন্তু চীন কে ভারতের বিরুধ্যে সংস্কৃতিক গতিরোধের সুযোগ করে দিয়েছে| চীন বাংলাদেশ কে প্রচুর আর্থিক সাহায্য করছে বিক্রমপুরে অতীশের নামের স্মৃতি সৌধের নির্মানের সাথে সাথে ঐ স্থানটিকে এক আন্তজাতিক পর্যটন ক্ষেত্রে পরিনত করার উদ্দেশ্যে| চীনের নিজস্ব স্বাথ রয়েছে এর পেছনে| চীন তিব্বত নিয়ে বিশেষ ভাবে উৎসহিত কিন্তু দালাই লামা প্রকরণে ভারতের ভূমিকায় চীন চিন্তাগ্রস্ত| চীন কে তিব্বত কে সম্পূর্ণ ভাবে আয়ত্বে আনতে হলে ভারত কে মধ্য থেকে সরাতে হবে আর সহস্র বছরের ভারত-তিব্বতের ঐতিহাসিক সম্পর্ক কে আমূলে কেটে দিতে হবে| যে হেতু অতীশ আজ ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দের কাছে দালাই লামার চেয়ে অনেক উচুতে এবং ওনাকে দেবতা জ্ঞানে পূজিত, তাই চীন বাংলাদেশের এই দাবী কে নিজের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে আর অতীশের আতিস্ত্ব কে সম্পূর্ণ ভাবে বাংলা দেশের সাথে যুক্ত করে দেবার উদ্যোগ নিয়েছে| অতীশের সাথে ভারতের নাড়ির টান কে পুরোপুরি উপডে ফেলে দিতে চলেছে|
আমাদের দুর্ভাগ্য এটা যে আমাদের আজ অতীতের কিছু লেখকের ভুলের মাশুল গুনতে হচ্ছে- আমদের নিজের বাডির লোককে কিছু চক্রান্ত কি ভাবে আমাদের কাছ থেকে বিছিন্ন করছে সেটা মুক দর্শকের মত দেখতে হচ্ছে !
Leave a Reply