Change font size  -A  A  +A  ++A

দূর্গা চরণে শরৎ কে শ্রাধ্যাসুমন.


শরৎ কি আজ সত্যি বিস্মৃত ভাগলপুরের বাঙালিদের কাছে ? ইতিহাস শেষ হয়ে গেলে কি থাকবে ভাগলপুরে ?

@news5pm

September 17th, 2018

ব্যুরো রিপোর্ট

ভাগলপুরের বাঙালি টোলার গঙ্গা নদীর ঘাট, দূর্গাচরণ স্কুল, বুড়ানাথের আঁকাবাঁকা রাস্তা, আদমপুরের লাইব্রেরি আর তার সামনে রাজবাটির ধাংসস্তুপ. আজও বর্ষার বাড়ন্ত গঙ্গা ঢেউ তুলে ছুটে যায়. শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শ্রীকান্ত এর প্রথম পর্বের বর্ণিত ভাগলপুরের এই অঞ্চলের দৃশ্য আজ বিদ্যমান যদিও কিঞ্চিত পরিবর্তন হয়েছে নতুন মল, এপার্টমেন্ট, দোকানপাট ইত্যাদির আগমনে. কিন্তু শরৎ এর উপস্থিতি আজ বিদ্যমান এই শহরে তবে সেটা হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হবে.

কিন্তু ভাগলপুরের মুষ্ঠিমেয় বাঙালিদের কাছে শরৎ আজ প্রায় এক অতীত- আজ শরৎএর ১৪৩ তম জন্মবার্ষিকীর উপলক্ষে অনুষ্টিত কার্য্যক্রমে নগন্য দর্শক এর প্রমান. আজ দুর্গাচরণ প্রাথমিক স্কুলে ভাগলপুর শাখার এবং স্কুল কমিটির যৌথ প্রয়াসে উজ্জাপিত হয় অমর কথা শিল্পীর জন্মবার্ষিকী. স্কুল কমিটির প্রায় এক যুগ পর স্কুলে  স্পোর্টস এর আয়োজন করে বাচ্চাদের মধ্যে শরৎএর বিষয়ে জানাবার জন্য. শরৎএর মাতুলালয়ে, বাঙালিটোলার গাঙ্গুলী বাড়ি তে মাল্যার্পণ এবং বঙ্গীয় সাহিত্য পারিসদে শরৎএর মূর্তিতে স্শ্রধ্যাসুমন জানানো হয়.

স্কুল এর ছাত্র ছাত্রী দ্বারা মার্চপাস্তিং.

কিছু কর্মঠ ভাগলপুর শাখার কার্যকর্তা ছাড়া স্থানীয় বাঙালি সমাজের উপস্থিতি ছিল শূণ্য- ফেইসবুক whatsapp এর কলমবীরেদের যারা বড় বড় কমেন্ট আর বড় বড় কথা পোস্ট করে নিজেদের অস্থিত ফলাও করতে চায়, তাদের আজ এই অনুষ্ঠানে থাকা খুবই প্রয়োজন ছিল.

সন ১৮৮২, সাত বছরের একটা ছেলে নাম নেড়া নিজের মামার হাত ধরে এসেছিল এই স্কুলএ. সেই ছেলে আগে গিয়ে নিজের পরিচয় শরৎ হিসাবে পুরো দুনিয়ার সামনে তুলে ধরেছিল আর  যার রচনা সমগ্যপুরো দুনিযাতে 17 টার বেশি আন্তর্জাতিক ভাষা তে প্রকাশিত করা হয়. এই দূর্গা চরণ থেকে বহু প্রতিভা বের হয়েছে কিন্তু আজ দুর্ভাগ্যক্রমে এই স্কুল তে কোনো বাঙালি ছাত্র/ছাত্রী নেই আর বাংলা ভাষার কোনো স্থান নেই. কিন্তু ভাগলপুরের এইকটি সংস্থান বাঁচাবার জন্য বাঙালি সমিতির স্থানীয় শাখা আজ এক প্রকারে বিনা জনসমর্থনে, সর্বদা প্রয়্ত্নশীল. আর আজকের অনুষ্ঠান এর নিদর্শন.

শরৎএর মাতুলালয়ে আজ উজ্জ্পিত হয় এক অনুষ্ঠান

আজ থেকে প্রায় ১৫-২০ বছর আগে শরৎএর জন্মবার্ষিকী পালন করার অনুষ্ঠানে স্থানীয় বাঙালিদের থাকত পূর্ণ সহযোগিতা. শুধু তাও নয় প্রতি বাঙালি এখানে নিজে থেকে এগিয়ে আসতেন, অনুষ্ঠানগৃহ থাকত ভরা. আর আজ ভাগলপুর শাখার দ্বারা এই রূপ অনুষ্ঠানএর জন্য ধার্য্য সহযোগ রাশি দিতে কজন এগিয়ে আসেন?

লোকে বাঙালির সংখ্যালঘুতাকে দায়ী করেন এই রখম স্থিতির জন্য কিন্তু ভাগলপুরের পরিবেশ আজ দুষিত, আর তার কারণ হল একতার অভাব. গুটবাজী, নিজেদের মধ্যে কোন্দল, হিংসা প্রবনতা আর পী এন পী সি তে মস্গুল ভাগলপুরের বাঙালি বোধহয় জানেনা যে তাদের এই

লাইব্রেরি তে মাল্য়ার্পন অনুষ্ঠানে সমিতির কার্য্যকর্তারা

মনোভাব সমাজে কতটা অবক্ষরন ঘটিয়ে দিয়েছে আজ পর্যন্ত. আর তার থেকেও বড় যে নতুন প্রজন্ম কে সম্পূর্ণ বঞ্চিত থাকতে হবে ভাগলপুরের গৌরব পূর্ণ ইতিহাস থেকে. ৫০ প্রতিশতের বেশী বাঙালির প্রতিষ্ঠান আজ ভাগলপুরে শেষ হয়ে গিয়েছে, বাকি কি ভাবে কালকে থাকবে সেটা কিন্তু সম্পূর্ণ নির্ভর করে বাঙালিদের নিজেদের একতার উপর.

শরৎ নিজের প্রায় সব রচনা তে তত্কালীন সমাজের ন্যায় অন্যায়ের উপর আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দিয়ে ছিলেন. উনি যদিও কোনো সোজা মন্তব্য কখনো করেননি তবে ওনার লেখা জনমানুষকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে জলের মত সোজা করে বুঝিয়ে দিয়েছে যে ওনার ইঙ্গিত কোন দিকে.

দুর্ভাগ্যক্রমে, যে বাঙালি শরৎকে নিয়ে সবচাইতে বেশি মাতামাটি করে, সেই বাঙালি কেন আজ এত অসহায়, কেন নিজেদের মধ্যে একতার অভাবে কোন্দলরত, কেন দুরে দলছুট হয়ে একা দাঁড়িয়ে থাকে ভাগলপুরে?


Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.