Change font size  -A  A  +A  ++A


113 বছর পর অদ্ভুত সংযোগ- রবীন্দ্র নাথের রংপুর আর ভাগলপুর এক মঞ্চ থেকে উজ্যাপিত করে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের 200 তম জন্ম বার্ষিকীর ট্রেলার !

@news5pm

March 12th, 2018

ব্যুরো রিপোর্ট /

ইতিহাসের দুই অবিস্মরনীয় ঘটনা, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের তত্কালীন অঙ্গ প্রদেশের  জামতারার আদিবাসী বহুল কর্মাটাড় এসে জীবনের শেষ পর্যন্ত অতিবাহিত করা এবং অধুনা বাংলাদেশ এর রংপুর থেকে বিবি রোকেয়ার 16 বছর বয়সে বিয়ে হয়ে ভাগলপুরে আসা.

ইতিহাস এই সন্ধিক্ষণের প্রাসঙ্গিকতা আজ বহু বছর পর তুলে ধরলেন ভাগলপুরের ঐতিহাসিক বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে বেগম রোকেয়া বিশ্ব বিদ্যালয়, রংপুর, বাংলাদেশের ডিন, প্র. সারিফা সলবা দিনা. প্র. দিনা “বিদ্যাসাগর ও নারী মুক্তি” উপর আযোজিত এক সেমিনারে সুন্দর করে তুলে ধরলেন বহু অজানা তথ্য. নারী শিক্ষা এবং নারী মর্যাদা পুনস্থাপিত করতে গিয়ে কি সাংঘাতিক সংঘর্ষ করতে হয়ে ছিল এনাদের বিশেষ করে রোকেয়া মত এক সাধারন মুসলিম গৃহ বধু কে সেটার উপর দৃষ্টি পাত করনে বাংলাদেশ থেকে আগত প্র. দিনা.

প্র. সারিফা সলবা দিনা ভাগলপুরে .

প্র. দিনা ইঙ্গিতে জানিয়ে দেন নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে বিদ্যাসাগর বা বিবি রোকেয়ার অবদান টা আজ প্রাসঙ্গিক এ দেশে কিন্তু বাংলাদেশ সরকার রোকেয়ার স্মৃতিতে ওনার নামে বিশ্ব বিদ্যালয় স্থাপনা করে দিয়েছে অনেক আগেই. বাংলাদেশ থেকে আগত বক্তা, রিসিন পরিমল, প্রিয়াংকা আচার্জী ও যোগ দেন প্র. দিনার মতে.

প্র. দিনা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বিশাল ব্যক্তিতর উপর আলোকপাত করে বলেন যে আজ বিহার সরকার রাজ্যে বালিকা বিবাহ সহ কিছু সমাজিক অপরাধ কে রুকতে উঠে পড়ে লেগেছে এমন কি সম্পর্কিত আইন কে আরও দৃঢ় করা হয়েছে. কিন্তু আজ থেকে 100 বছরের অনেক আগে বিদ্যাসাগর মহাশয় এই বালিকা বিবাহের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়ে ছিলেন কঠোর ভাবে. অনেক জল গড়িয়েছে তার পর কিন্তু সমাজের নিশ্প্রিযতার প্রতিফল  যে আজ সরকার কে ও রুখে দাড়াতে হচ্ছে অনেক জল ঘোলা হয়ে যাবার পর.

দীপ প্রজ্জলন .

 

অবশ্য প্রতি বক্তাই বিহার বাঙালী সমিতি কে ধন্যবাদ জানান বিদ্যাসাগরের ২০০ তম জন্ম বার্ষিকী  যেটা আগামী ২০২০ তে সম্পন্ন হতে চলেছে, তার অগ্রিম প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য. আজকের অনুষ্ঠান চল তার এক ট্রেলার.

সমিতির যুগ্ম সম্পাদক, সুনির্মল দাস জানালেন যে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের আগামী ২০০ জন্ম সমারোহের প্রস্তুতির জন্য সাজ সাজ রব পড়ে গেছে. কার্মাটাড় কে কেন্দ্রবিন্দু করে সারা দেশে বিভিন্ন কার্যসুচির পরিকল্পনা করা হয়েছে. এই ক্রমে আজ ভাগলপুরের ঐতিহাসিক মাটিতে রোকেয়ার স্মৃতির উদ্দেশে আযোজিত এই সেমিনারে বিদ্যাসাগর মহাশয় কে সম্মান নিবদন করা আমাদের একান্ত কামনা, জানালেন বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, ভাগলপুরের যুগ্ম সম্পাদক, অঞ্জন বাবু.

বিহার বাঙালি সমিতি, ভাগলপুর শাখার সচিব, জয়জীত ঘোষ এর অনুসারে বঙ্গ ভঙ্গের বিরোধে কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরএর উদ্দ্গে বাংলার বাইরে ভাগলপুর এবং রংপুরে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের দুই শাখার পরিচালন শুরু হয় 1905 সালে. আজ প্রায় 113 বছর পর রংপুর ভাগলপুরের সাহিত্যিকদের যৌথ সমাবেশে এই আয়োযন ইতিহাসের পুরানাবৃতি এবং একটি ঐতিহাসিক ঘটনা.

বক্তাদের সারগর্ভিত বক্তবো .

 

বিদ্যাসাগর মহাশয় যদিও ভাগলপুরের মাটি থেকে অনেক দুরে ছিলেন কিন্তু তিনি এই অঙ্গ প্রদেশের মাটিতে ওনার জীবনের শেষ দিনগুলো কেটে ছিল. দুস্থ, অসহায় গরিব আদিবাসীদের পাশে দাড়িয়ে থেকেছেন শেষ দিন অব্দি. সমাজ অবশ্য কটু চোখে তাকিযে ছিল কিন্তু উনি কোনো ভ্রুক্ষেপ করেন নাই.

বিদ্যাসাগর এর মত রোকেয়ার  ও  ছিল প্রায় এক অভিপ্রায় – নির্যাচিত  এবং লাঞ্চিত নারী দের কি ভাবে বাচানো যায়? কি ভাবে নারীদের শিক্ষার মন্ত্রে দীক্ষিত করা যায়- এটা ছিল মূল লক্ষ. স্বামীর পূর্ণ সহযোগিতা থাকলেও রোকেয়া কাছে পর্দানাসিন মুসলমান মহিলাদের বাড়ি থেকে বার করা ছিল এক বড় চ্যালেঞ্জ. সমাজ সেবার মধ্যে ও রোকেয়ার লেখার কাজ সমান ভাবে বজায় রেখে ছিলেন. 1905 সালে ইন্ডিয়ান লেডিস মাগাজিনে প্রকাশিত ‘সুলতানাস ড্রিম’ সমাজে আলোড়ন তুলেছিল ভাগলপুর থেকে. প্র. দিনার সম্পাদিত রোকেয়ার রচনাবলী আজ এই সেমিনারে উন্মোচন করা হয়.

তিলকা মাঝি ভাগলপুর বিশ্ব বিদ্যালয় এর কুলপতি প্র. নলিনী কান্ত ঝা আজ এই সেমিনারের উদ্ঘাটন করেন. নিজের সম্বোধনে উনি বাঙালির অবদানের কথা উচ্চ কন্ঠে প্রশংসা করেন. বাঙ্গলাদেশ ছাড়াও কলিকাতা, শিলিগুড়ি, পাটনা, মুম্বাই থেকে আগত বিভিন্ন সাহিতিক সহ জ্ঞানীগুনি জন নিজ নিজ বক্তব্য তুলে ধরেন এই সভাতে. আরো এক ঐতিহাসিক ঘটানার সূত্রপাত হয় এখানে- আমর কথা শিল্পী শরত চন্দ্রের মূর্তির স্থাপনা হয় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ভবনের বাহিরে  কুলপতি ঝার হাতে.

তিলকা মাঝি ভাগলপুর বিশ্ব বিদ্যালয় এর কুলপতি প্র. নলিনী কান্ত ঝা আজ এই সেমিনারের উদ্ঘাটন করেন

এক কথায় বলা যেতে পারে এক সুস্থ অনুষ্ঠান কিন্তু ভাগলপুরের মত বাঙালির এক প্রাচীন দুর্গে আজ দর্শক সংখা ছিল নগন্য যেটা অনুষ্ঠান আয়োজন কর্তাদের কাছে কিছু না হলেও বাহিরাগত অথিতিবৃন্দদের কাছে ছিল এক পরম বিস্ময়. “শরত এর শহরের বাঙালি কোথায় ? কেন এত কম আজ স্থানীয়দের সংখা?” ছিল বহিরাগত অথিতিদের প্রশ্ন.

“ আজ আমরাই নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারছি, সংকীর্ণতা এবং নিজেদের মধ্যে রেশারেশি করে মুষ্টিমেয় বাঙালি এখানে কি চায় সেটা এক প্রশ্ন,” জানালেন এক স্থানীয় যুবক. অনেকে প্রশ্ন করে বাঙালিও এই উদাসীন মনোভাবের উপর. বিদ্যাসাগর বা রোকেয়া কে একলা যুদ্ধ করতে হয়ে ছিল এই জমিতে, অল্প সংখক বাঙালি কে নিজের ক্ষমতা কি ভাবে বজায় রাখতে হবে তার সন্ধান কিন্তু নাই ভাগলপুরের বাঙালিদের কাছে.


Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.