Change font size -A A +A ++A

নামামী গঙ্গা : সুর্যৌদয় এর বিহঙ্গম দৃশ্য !
ব্যুরো রিপোর্ট/
70 দশকের ভাগলপুর এক অতি সাধারণ দৃশ্য- শহরের চর্চিত পুজারী দুর্গাদাস মহাশয় দুপুর হবার কিছু আগে খুব দ্রুত মানিক সরকার ঘাট এর দিগে প্রায় ছুটে চলেছেন. কালীবাড়ির কাছে কিছু ধার্মাপ্রান মহিলা করজোরে ওনার সঙ্গ নেন. সকলের উদ্দেশ্য গঙ্গা ঘাট. দিনটা ছিল গঙ্গা দশহরা এবং দুর্গাদাস মহাশয় এর নদীর ঘাটে জলে নেমে নিষ্ঠার সহকারে গঙ্গা পূজা করানো ভাগলপুরের এক অতীত ইতিহাস.
ঘটনাচক্রে আজ গঙ্গা দশহরা উপলক্ষ্যে পুরানো স্মৃতি সামনে ভেসে উঠে. যদিও আজ দূর্গাদাস মহাশয় নাই, না আছে মানিক সরকার ঘাটে গঙ্গা, শুধু মানিক সরকার ঘাট কেন পুরো শহরের যে কোনো ঘাটেই আজ গঙ্গার কোনো চিহ্ণ নেই – নদী পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে. গঙ্গা সরে গিয়াছে অন্কে দূর. ভাগলপুর শহরে ডজন ঘটের কোনো টাতে আজ জল নেই, চান করতে গেলে শহরের বাইরে বিক্রাম্শিলা ব্রিজএর পর নদীর মেন ধারা দেখা যাবে. শুধু বর্ষার সময় নদী নিজের ভারা যৌবন নিয়ে ঝাপিয়ে পরে শহরের কিনারাবর্তী কুলে. আর নেই গঙ্গা পূজা করার সেরকম কোনো উদ্যোগ. নতুন প্রজম্ন বোধহয় গঙ্গা দশহরার বিষয়ে কিছুই জানেনা আজ.

মানিক সরকার ঘাট – যেখানে এক সময় গঙ্গা দশহরা হতো !
প্রসঙ্গক্রমে গঙ্গার এই রূপ পরিবর্তন শুধু ভাগলপুরের জন্য নয়, পুরো বিহারে একই রূপ নদীর. বিহারে বক্সারএ গঙ্গা এই রাজ্যে প্রবেশ করে আর ভাগলপুরের পীরপৈতীর কাছে ঝারর্খন্ডে প্রবেশ করে. আগে সাহেব্গান্জের রাজমহলএ গঙ্গা ফারাক্কা বারাজ হয়ে বাংলার জমিতে প্রবেশ কোরে আগে সাগরে গিয়ে মিলিত হয়.
শুধু বর্ষার সময় নদীর ভয়ংকর রূপ দেখা যায়, 2016 র বন্যার ভয়াবহতা আজও মনে ভয় আনে. নদীর এই অবনীতি-বর্ষায় প্রায়াল্নকারী রূপ আর বাকি সময় মৃত হয়ে দুরে সোরে যাওয়া আজ বিহারের মত রাজ্যে এক ভীষন বড় সমস্যার রূপ ধারণ করেছে. বিহারের মুখ্য মন্ত্রী, নীতিশ কুমার সমস্যার সমাধান এর জন্য ক্রমাগত দিল্লি সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে চলছে.
গঙ্গার পেটে সিল্ট (গাদ) জমে গঙ্গার স্বাবাভিক ক্ষমতা কে কম করে দিচ্ছে আর এর জন্যে নদীর স্বাবাভিক জল ধারণ করার ক্ষমতা কে কম করে দিচ্ছে যার কারণে বর্ষার অধিক জল নদীর পথে প্রবাবিত না হয়ে, দু পাশের কুলে জল উপচে পরছে. নীতিশ কুমার গঙ্গার এই সিল্ট সারাবার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে. ফারাক্কা বরাজের কারণে গঙ্গার যে গতি অবরুদ্ধ হয়েছে সেটা নীতিশ পরিস্কার দুনিয়ার সামনে তুলে ধারার চেষ্টা কোরছে.

বিক্রামশিলা ব্রিজ এর নিকট নদীর মেন ধার আর জমে উঠা গাদ রূপী বালির পাহাড়.
দিল্লি সরকার গঙ্গার এক্সপার্টদের এক কেন্দ্রীয় টীম বিহার পাঠাবার ব্যবস্তা কোরেছে, এই টীম আগামী 5 জুন বিহারে আসছে. আমাদের মনে রাখা দরকার যে বিশ্বে ভারত এমন একটি দেশ যেখানে গঙ্গা নদীর জন্য একটি আলাদা মন্ত্রনালয় আছে.
সম্প্রতি এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রনালয় এর মন্ত্রী, উমা ভারতী নামামী গঙ্গা যোজনার অন্তর্গত বিহারের সুলতানগঞ্জ সহ কিছু স্থানে ভ্রমণ করে. কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও গঙ্গাএ পেটে সিল্ট জমার কথা বলেছে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওবার প্রাতুস্রুতি দিয়েগেছে. উনি জনসাধারনের কাছে গঙ্গা কে নোংরা না করার বিশেষ অনুরোধ ও করেছেন. গঙ্গার ব্যপক প্রদূষণ আজ্ এক বড় এবং বিকট সমস্যা ধারণ করেছে.
নীতিশ এক দিকে যখন ফারাক্কা কে উদ্দেশ করে জ্নান্দলন করার প্রস্তুতি করতে সুরু করছে ঠিক সে সময় উমা ভারতী ফারাক্কার উপর কোনো দোশারোপন করেনি. ঘটনাক্রমে গঙ্গা কে নিয়ে বিহারের রাজনীতি উত্তপ্ত হতে চোলেছে.
যাইহউক, রাজনীতির আঁচ আজ সব স্থানে বিরজমান, গঙ্গার সঙ্গে রাজনীতি কিছু নতুন কথা হবে না কিন্তু এতে নদীর সাথে বেইমানি হবে. আর ভাগলপুরে নিবাসীদের জন্য গঙ্গা দুরেই থেকে যাবে. দুর্গাদাসের গঙ্গা পুজো গল্প কথা হয়ে থেকে যাবে.
Leave a Reply