Change font size -A A +A ++A

ব্যুরো রিপোর্ট/
এটা ঠিক যে আজ থেকে প্রায় 150 বছর পূর্বে বিহারের প্রথম বালিকা বিদ্যালয়, মোক্ষদা বালিকা বিদ্যালয় এর স্থাপনার মূলে ছিলেন ঋষি অরবিন্দের পিতা কে ডি ঘোষ মহাশয়ের ন্যায় তত্কালীন সমাজের কিছু প্রতিষ্ঠত বাঙালি. জাতির গৌরভ কাদম্ব্নি গাঙ্গুলী, যিনি পুরো এশিয়া মহাদেশের প্রথম মহিলা ডাক্তার হবার সৌভাগ্য পেয়েছিলেন , এই বিদ্যালয়ের প্রাপ্তন ছাত্রা ছিলেন.
আগামী জানুয়ারী 31 এই বিদ্যালয় নিজের দেড়শতবর্ষপূর্তির উজ্জাপন সমারোহ প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত. সংখালঘু এই বিদ্যালয় পূর্বেই সরকার দ্বারা অধিগৃহীত হওয়াতে বাঙালি সংখালঘু গভের্নিং বডির এই বিদ্যালয়ের সাথে প্রতক্ষ বা অপ্রতক্ষ কোনো যোগাযোগ নেই. কিন্তু এই জানুয়ারী 31 এর অনুষ্ঠানে কোনো বাঙালি সংগঠন, বিশেষ করে বিহার বাঙালি এসোসিয়েশন এর অংশগ্রহন করার আজ পর্যন্ত কোনো উদ্দেক না নেওয়া সত্যি এক দুখদ এবং ভাগলপুরের জন্য এক লজ্জাকর ঘটনা.
জানুয়ারী 31, 1868 এই বালিকা বিদ্যালয়ের স্থাপনা হয় কে ডি ঘোষ মহাশয় এবং তত্কালীন ভাগলপুরের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি বিশেষের প্রচেষ্টাতে. সম্পূর্ণ বিহারের নারী শিক্ষার এই প্রথম বালিকা বিদ্যালয় ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায় শুরু করে. ঠিক 10 বছর পর, 1878 ভাগলপুরের বিশিষ্ট সমাজকর্মী , রাজা শিবচন্দ্র বেনার্জী যিনি প্রাখত বলিউড শিল্পী অশোক কুমার এবং কিশোরে কুমার এর প্রপিতামাহ ছিলেন, নিজের মা, মোক্ষদা দেবী বেনার্জীর স্মৃতি তে এই বিদ্যালয়ের জন্য জমি এবং আর্থিক অনুদান দেন. রাজা শিবচন্দ্রের অনুদানে মোক্ষদা বালিকা বিদ্যালয় শুরু হয় 10 জন ছাত্রী কে নিয়ে, উর্মিলা বেনার্জী ছিলেন প্রথম প্রধান শিক্ষিকা এই বিদ্যালয়ের.
রাজা শিবচন্দ্র মায়ের নামের সাথে সাথে নিজের প্রয়াত পিতা, দূর্গা চরণ বেনার্জীর স্মৃতি তে দূর্গা চরণ বিদ্যালয় বালক বর্গের জন্য স্থাপনা করেন. অমর কথা শিল্পী, শরত চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এই স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহন করেছিলেন. দূর্গা চরণ ও মোক্ষদা স্কুল পাশাপাশি অবস্থিত- অতীতের এক মহান দম্পতি ঠিক যেন হাত ধরে ভাগলপুরের হাজার হাজার বাঙালি ছেলে মেয়ে কে বছর এর পর বছর ধরে লেখাপড়া করিয়ে আসছেন !
স্ত্রী শিক্ষা উচ্চ অধায়ের সূত্রপাত মোক্ষদা বালিকা বিদ্যালয় থেকেই শুরু- ইতিহাস সেরূপ ইঙ্গিত করে ভাগলপুরে : সন 1949 এর 15 অগাস্ট এ সুন্দরবতী মহিলা মহাবিদ্যালয়ের, এস এম কলেজের, ভিত রাখা হয়. “আমি ছিলাম মোক্ষদার ফার্স্ট পাস আউট ব্যাচএর স্টুডেন্ট, কালক্রমে ভর্তি হলাম এস এম কলেজের আর রিটর্দ করলাম লাইবেরিয়ান পোস্ট থেকে,” স্মৃতি চারণ করলেন ড. গৌরী মজুমদার. “সব বাঙালি ছিলেন কর্তাধর্তা, ছিলেন সারদা দেবী বিদ্যালান্কার ; কোথায় গেল দিনগুলো,” আক্ষেপ প্রকাশ করেন ড. মজুমদার. শুধু উনি নন অনেক বাঙালি অবাঙালি প্রাপ্তন ছাত্রী দের ও ঐ এক সুর –কোথায় গেল সেই দিন গুলো.
তবে এক কথায় বাঙালিপনা শেষ হয়ে যাওয়াতে স্কুল আজ সেই দশাতে নেই. ভাগলপুরের বাঙালি সমাজ দূর্গা চরণ স্কুল কে সরকার কে অনুগৃহীত করতে দেয়নি তবে মোক্ষদা স্কুল হাত থেকে বের হয়ে গিয়েছিল. এর ক্ষতি পূরণ করা এই বাঙালি সমাজের জন্য অকল্পনীয়.
স্কুল স্টাফএরা চাঁদা তুলে 150 বছর উজ্জাপিত করতে চলেছে, স্কুল এর একটি সুভেনীয়র এর প্রকাশন ও হবে কিন্তু বাঙালিপনা ছাড়া কতটা সফল হবে অতীতের স্মৃতিচারণ ? ভাগলপুরের বাঙালিরা কি জানে 31 জানুয়ারির বিষয় ? যদি জানে তো কি কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে?
কেউই জানেনা, জানলেও আগ্রহ নেই.
বুদ্ধিমান বাঙালীদের নিষ্ঠুর ঔদাসিন্যে দুর্গাচরণ স্কুল দুটিও কদিন বাঙালীদের হাতে থাকে বলা মুশ্কিল.
রিপোর্টের লেখক এ বিষয় কিছু করার পুর্বাগ্রহবিহীন আগ্রহ রাখেন কি? জানালে সুখী হব.